অনলাইন ডেস্কঃ নানা আলোচনার পর অবশেষে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের অনুমতি পেয়েছে বিএনপি। বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) বিকেলে ২৩ শর্তে দলটিকে সমাবেশের অনুমতি দেওয়ার কথা জানান ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক।
এ বিষয়ে ডিএমপির পক্ষ থেকে ২৩টি শর্ত দিয়ে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বরাবর পাঠানো ওই চিঠিতে সমাবেশের অনুমতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
ডিএমপি কমিশনারের পক্ষে বিশেষ সহকারী সৈয়দ মামুন মোস্তফা স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, উপর্যুক্ত বিষয়ে আপনার আবেদনের প্রেক্ষিতে নিম্নবর্ণিত শর্তাবলি যথাযথভাবে পালন সাপেক্ষে শুক্রবার (২৮ জুলাই) দুপুর ২টা থেকে ৫টা পর্যন্ত নয়াপল্টনস্থ বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে (পুলিশ হাসপাতাল ক্রসিং থেকে নাইটিংগেল মোড় পর্যন্ত মধ্যবর্তী স্থানে) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির উদ্যোগে ঢাকার মহাসমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হলো।
যে ২৩ শর্তে অনুমতি:
(১) এই অনুমতিপত্র স্থান ব্যবহারের অনুমতি নয়, স্থান ব্যবহারের জন্য অবশ্যই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হবে।
(২) স্থান ব্যবহারের অনুমতিপত্রে উল্লেখিত শর্তাবলি যথাযথভাবে পালন করতে হবে।
(৩) অনুমোদিত স্থানেই (পুলিশ হাসপাতাল ক্রসিং থেকে নাইটিংগেল মোড় পর্যন্ত মধ্যবর্তী স্থানে) মহাসমাবেশের যাবতীয় কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।
(৪) কোনো অবস্থাতেই অনুমোদিত স্থানের বাইরে (পুলিশ হাসপাতাল ক্রসিং থেকে নাইটিংগেল মোড় পর্যন্ত মধ্যবর্তী স্থানে) কোনো ধরনের জনসমাগম করা যাবে না।
(৫) নিরাপত্তার জন্য নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পর্যাপ্ত সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক (দৃশ্যমান আইডি কার্ডসহ) নিয়োগ করতে হবে।
(৬) স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় মহাসমাবেশস্থলের (পুলিশ হাসপাতাল ক্রসিং থেকে নাইটিংগেল মোড় পর্যন্ত মধ্যবর্তী স্থানে) চারদিকে উন্নত রেজ্যুলেশনযুক্ত সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে।
(৭) নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় মহাসমাবেশে আগতদের হ্যান্ড হেন্ড মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে (ভদ্রোচিতভাবে) চেকিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।
(৮) নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় মহাসমাবেশস্থলে অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা রাখতে হবে।
(৯) শব্দ দূষণ প্রতিরোধে সীমিত আকারে মাইক/শব্দযন্ত্র ব্যবহার করতে হবে, কোনক্রমেই অনুমোদিত স্থানের (পুলিশ হাসপাতাল ক্রসিং থেকে নাইটিংগেল মোড় পর্যন্ত মধ্যবর্তী স্থানে) বাইরে মাইক/শব্দযন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না।
(১০) অনুমোদিত স্থানের (পুলিশ হাসপাতাল ক্রসিং থেকে নাইটিংগেল মোড় পর্যন্ত মধ্যবর্তী স্থানে) বাইরে প্রজেক্টর স্থাপন করা যাবে না।
(১১) আজান, নামাজ ও অন্যান্য ধর্মীয় সংবেদনশীল সময় মাইক/শব্দযন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না।
(১২) ধর্মীয় অনুভূতির ওপর আঘাত আসতে পারে এমন কোনো বিষয়ে ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন বক্তব্য প্রদান বা প্রচার করা যাবে না।
(১৩) মহাসমাবেশের কার্যক্রম ব্যতীত মঞ্চকে অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করা যাবে না।
(১৪) মহাসমাবেশ শুরুর দুই ঘণ্টা পূর্বে লোকজন সমবেত হওয়ার জন্য আসতে পারবে।
(১৫) অনুমোদিত সময়ের মধ্যে (২টা থেকে ৫টা) মহাসমাবেশের সার্বিক কার্যক্রম শেষ করতে হবে।
(১৬) কোনো অবস্থাতেই মূল সড়কে যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না।
(১৭) আইনশৃঙ্খলা পরিপন্থি ও জননিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় এমন কার্যকলাপ করা যাবে না।
(১৮) রাষ্ট্রবিরোধী কোনো কার্যকলাপ ও বক্তব্য প্রদান করা যাবে না।
(১৯) উস্কানিমূলক কোনো বক্তব্য প্রদান বা প্রচারপত্র বিলি করা যাবে না।
(২০) কোনো ধরনের লাঠিসোঁটা/ব্যানার, ফেস্টুন বহনের আড়ালে লাঠি, রড ব্যবহার করা যাবে না।
(২১) আইনশৃঙ্খলার অবনতি ও কোএনা বিরূপ পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে আয়োজনকারী কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবেন।
(২২) উল্লেখিত শর্তাবলি যথাযথভাবে পালন না করলে তাৎক্ষণিকভাবে এই অনুমতির আদেশ বাতিল বলে গণ্য হবে।
(২৩) জনস্বার্থে কর্তৃপক্ষ কোনো কারণ দর্শানো ব্যতিরেকে এই অনুমতি আদেশ বাতিল করার ক্ষমতা সংরক্ষণ করেন। সুত্রঃ বাংলা নিউজ