পশু আমদানীর কোন অনুমোদন হয়নি, দেশীয় পশু দিয়েই কোরবানী

সাভার প্রতিনিধিঃ দেশে পর্যাপ্ত সংখ্যক কোরবানীর পশু প্রস্তুত রয়েছে। এবার আমাদের প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ গবাদিপশু কোরবানীর জন্য প্রস্তুত রয়েছে। যেখানে আমাদের চাহিদা রয়েছে ১ কোটি ৭ লক্ষ। সেই হিসেবে ২৩ লক্ষ দেশীয় গবাদিপশুর উদ্বৃত্ত রয়েছে, যেটা আমাদের বাড়িত প্রস্তুতি। রবিবার দুপুরে বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএলআরআই) কর্তৃক আসন্ন ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাস্তবায়নের জন্য গবেষণা কর্মসূচি প্রণয়নে অংশীজনদের মতামত ও পরামর্শ গ্রহণের লক্ষ্যে “বার্ষিক গবেষণা পরিকল্পনা কর্মশালা-২০২৪”এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আব্দুর রহমান এমপি এসব কথা বলেন।

এসময় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আরও বলেন, রাষ্ট্রীয়ভাবে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বৈধভাবে কোরবানীর পশু আমদানির কোন অনুমোদন দেওয়া হয় নাই। এরপরও যদি চোরাইপথে অন্যান্য দেশ থেকে কোন পশু বাংলাদেশে প্রবেশ করে তার দায় আমরা নিবো না। কারন রাতের আধাঁরে দেশে অনেক কিছুই ঢুকে, সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনী তাদেরকে প্রতিহত করার চেষ্টা করছে। আমরাও সামাজিকভাবে বিষয়টি সম্পর্কে জনগনকে সচেতন করার চেষ্টা করছি।

এর আগে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দক্ষ নেতৃত্ব এবং দূরদর্শী পরিকল্পনায় আমরা আজ খাবারে স্বয়ংসম্পূর্ণ, মাছ-ডিম-মাংস উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ, দুধ উৎপাদনেও লক্ষ্যমাত্রা পূরণের খুব কাছাকাছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রগতিশীল ভাবনা থেকেই দেশে একেকটি উত্তরণ ঘটছে। গবেষকেরা আমাদের বড় সম্পদ। আপনাদের জ্ঞান চর্চা এবং কাজকর্মের মধ্য দিয়েই আমরা এগিয়ে যাবো, প্রাণিসম্পদের উৎপাদনে উপচে দেবো।

আয়োজিত কর্মশালায় বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট এর মহাপরিচালক ড. এস এম জাহাঙ্গীর হোসেনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রাণালয়ের সচিব সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়াদার।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর বলেন, বিএলআরআই এর হাত ধরেই প্রাণিসম্পদ খাতের যুগান্তকরী পরিবর্তন এসেছে। বিএলআরআই এর সামেনে বড় চ্যালেঞ্জ এখন জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় খাতে গবেষণা পরিচালনা করা। জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত থেকে প্রাণিসম্পদকে রক্ষা করতে হলে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে এবং জলবায়ুসহিষ্ণু জাত উদ্ভাবন করতে হবে। সংরক্ষিত ও উদ্ভাবিত জাত খামারি পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে হবে।

কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বিএলআরআই এর মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও পরিচালক (গবেষণা) ড. নাসরিন সুলতানা এবং বিএলআরআই এর চলমান গবেষণা কার্যক্রম এবং ভবিষ্যৎ গবেষণা পরিকল্পনা উপস্থাপনা করেন ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এবং প্রশিক্ষণ, পরিকল্পনা এবং প্রযুক্তি পরীক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. মোঃ রাকিবুল হাসান।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট এর মহাপরিচালক ড. এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আয়োজিত কর্মশালার মাধ্যমে সরকারের বিভিন্ন অভীষ্ট ও লক্ষ্যমাত্রা, যেমন- রূপকল্প-২০৪১ ও দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা, টেকসই উন্নয়ন অভিলক্ষ্য, অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা, নির্বাচনী ইশতেহার প্রভৃতির আলোকে বিএলআরআই-এর চলমানা কার্যক্রমসমূহের বাস্তবায়ন অগ্রগতি ও ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরা হয়। আজকের এই গবেষণা পরিকল্পনার মাধ্যমে যে সব সুপারিশমালা আসবে, সেসব সুপারিশ বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রাণিসম্পদ খাতের উৎপাদন বৃদ্ধি করে উন্নত বাংলাদেশের নিরাপদ প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণ এবং পাশাপাশি দেশীয় চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানির সুযোগ সৃষ্টি করা সম্ভব হবে বলে আমি মনে করি।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএলআরআই-এর সাবেক মহাপরিচালকগণ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় হতে আগত সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দ, প্রাণী ও পোল্ট্রি উৎপাদন এবং খামার ব্যবস্থাপনার সাথে জড়িত বিশেষজ্ঞগণ, বিভিন্ন খামারি সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ, বিভিন্ন পর্যায়ের খামারি ও শিল্প উদ্যোক্তাগণ, বিএলআরআই-এর বিভিন্ন পর্যায়ের বিজ্ঞানী ও কর্মকর্তাবৃন্দ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!