সাভার প্রতিনিধিঃ সাভারের আশুলিয়ায় বন্ধ কারখানা খুলে দেওয়া, কারখানায় মোবাইল ব্যবহার, জোরপূর্বক চাকরি থেকে অব্যাহতির প্রদানসহ বিভিন্ন দাবিতে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। প্রায় দুই ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখার কারণে মহাসড়কের উভয়পাশে শত শত যানবাহন আটকে পড়ায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। সোমবার বেলা ১১টার দিকে আশুলিয়ার চাড়ালপাড়া এলাকার ডংলিয়ন কারখানার শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে।
বিক্ষোদ্ধ শ্রমিকরা জানায়, বেশ কয়েকটি দাবি কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে পেশ করা হয়। তারা আমাদের দাবি কোনোভাবেই মানতে রাজি নয়। আমরা কারখানায় মোবাইল ব্যবহার করতে না পারায় গ্রামে পরিবারের কেউ মারা গেলেও তৎক্ষণাৎ কোনো খবর পাই না। এছাড়া সামান্য ত্রুটি দেখলেই জোরপূর্বক রিজাইন লেটারে স্বাক্ষর নিয়ে আমাদের চাকরিচ্যুত করা হয়। এসব বন্ধের জন্য দাবি জানানো হলেও কর্তৃপক্ষ কোনো ধরনের আশ্বাস সমাধান না দেয়ায় শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করে। এঘটনায় কর্তৃপক্ষ কারখানাটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে নোটিশ ঝুলিয়ে দেয়। তাই বন্ধ কারখানা খুলে দেওয়াসহ আমাদের বিভিন্ন যৌক্তিক দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকরা।
বন্ধের নোটিশে লেখা রয়েছে, ২৫ আগস্ট কারখানার শ্রমিকরা কিছু অবৈধ দাবি-দাওয়া নিয়ে কাজ বন্ধ করে বেআইনি ধর্মঘট আরম্ভ করে উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করতে শুরু করেন। তাদের এসব দাবি সম্পর্কে ইতোপূর্বে তারা কারখানা কর্তৃপক্ষকে কোনোভাবে অবগত করেনি। কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের বারবার শান্ত থাকতে অনুরোধ করার পরেও তারা কাজ বন্ধ রেখে উচ্ছৃঙ্খল আচরণ প্রদর্শন করেন এবং কারখানায় ভাঙচুরসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মারধর করে। পরে তারা কারখানার প্রধান ফটকসমূহের ভেতর থেকে তালা দিয়ে সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবরুদ্ধ করে রাখেন। তাদের এমন আচরণে আহত কর্মকর্তাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানোও সম্ভব হয়নি। কারখানা শ্রমিকদের এমন বেআইনি ধর্মঘট ও উচ্ছৃঙ্খল আচরণের কারণে বাংলাদেশ শ্রম আইনের ধারা ১৩ (১) অনুযায়ী ২৬ আগস্ট থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হলো। কারখানা বন্ধ থাকাকালীন শ্রমিকরা বাংলাদেশ শ্রম আইনের ধারা ১৩ (১) অনুযায়ী মজুরি ও অন্যান্য সুবিধাদি প্রাপ্ত হবেন।
এব্যাপারে আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার সারওয়ার আলম বলেন, একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বিভিন্ন দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। মূলত বিধি মোতাবেক ওভারটাইম, টিফিন বিল বাড়াতে হবে এসব দাবি তাদের। প্রায় দুই ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখার পর কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে শ্রমিকরা সড়ক ছেড়ে দেয়।
অন্যদিকে বকেয়া বেতনের দাবিতে সাভারের দক্ষিন রাজাশন এলাকার এমটারনেট লিমিটেড নামক তৈরী পোশাক কারখানার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাজ বন্ধ রেখে সোমবার দিনব্যাপী কারখানার ভিতরে বিক্ষোভ করেছে। তবে যে কোন ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবেলায় সতর্ক রয়েছে কারখানা কতৃপক্ষ।