রিক্সা চালককে পিটিয়ে দুই পা ভেঙ্গে দিলো র‌্যাকার চালক সোহেল

সাভার প্রতিনিধিঃ সাভারে ঢাকা জেলা উত্তর ট্রাফিক বিভাগের পুলিশ সদস্য র‌্যাকার চালক সোহেল রানার বিরুদ্ধে এক অটোরিক্সা চালককে লোহার পাইপ দিয়ে পিটিয়ে দুই পা ভেঙ্গে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। খবরটি অন্যান্য রিকশাচালকেরা জানতে পেয়ে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যের বিচার দাবি করে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে।

আহত রিকশাচালক মোঃ ফজলু (৪৫) দিনাজপুর জেলার হাকিমপুর থানার বনসাপুর এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে। অন্যদিকে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য মোঃ সোহেল রানা ঢাকা জেলা উত্তর ট্রাফিক বিভাগের র‌্যাকারচালক। শুক্রবার র‌্যাকারচালক সোহেল ও মোস্তফা সাভারের পাকিজা এলাকায় দায়িত্বরত থাকা অবস্থায় এ মারধরের ঘটনা ঘটেছে।

ভুক্তভোগী রিকশাচালক ফজলু বলেন, আমি ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ঢাকামুখী লেন দিয়ে যাওয়ার সময় পাকিজার সামনে থেকে একটি মোটরসাইকেলযোগে র‌্যাকারচালক সোহেলসহ দুইজন আমাকে ধাওয়া করেন। একপর্যায়ে তারা গেন্ডা বাস স্ট্যান্ডের কাছে রিকশা থামাতে বললে আমি সাইড করে থামাতে চাই। এসময় সোহেল রানা মোটরসাইকেল থেকে নেমেই একটি লোহার পাইপ দিয়ে প্রথমে আমার বাম পায়ে আঘাত করেন। আমি হাত দিয়ে ঠেকাতে চাইলে তিনি লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে ডান পা ভেঙে দেন। এরপর আমি রাস্তায় পড়ে যাই, আর উঠে দাঁড়াতে পারি নাই।

অটোচালক ফজলু আরও বলেন, আমাকে পেটানো দেখে স্থানীয়রা এসে ওই পুলিশ সদস্যকে ঘিরে ধরে। এসময় তিনি ভুল স্বীকার করে আমাকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করানোর কথা বললেও পরে অপর একটি রিকশায় তুলে দিয়ে সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলে তিনি চলে যান।

এদিকে রিক্সাচালককে মারধরের ঘটনা জানতে পেয়ে অন্যান্য রিক্সাচালকরা দোষী পুলিশ সদস্যের বিচার দাবি করে সাভার প্রেসক্লাবের সামনের আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে।

বিক্ষোদ্ধ রিকশাচালকরা বলেন, ভুক্তভোগী ফজলুকে নিয়ে সরকারি হাসপাতালে যাওয়ার সময় র‌্যাকারচালকদের সঙ্গে থাকা অটোরিকশা আটক করা দুই দালাল আবারও গতিরোধ করেন। পরে অন্যান্য রিকশাচালকরা বিষয়টি জানতে পেরে প্রেসক্লাবের সামনে সড়ক রোধ করে বিক্ষোভ করে। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে সবাইকে বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রিক্সা চালকরা অভিযোগ করেন, প্রতি সপ্তাহে র‌্যাকার চালক সোহেল রানা ও মোস্তফা রিক্সা আটকে দুই হাজার করে টাকা নেয়। তাদের কথামতো যারা টাকা না দেয় শুধুমাত্র রাস্তায় তাদের রিক্সা আটক করা হয়। তাই শত শত অটোরিক্সা তাদের সামনে দিয়ে চলাচল করলেও তারা বেছে বেছে যারা টাকা না দেয় তাদের রিক্সা ধরে জরিমানা এবং ডাম্পিং করে।

এসময় অভিযুক্ত সোহেল রানার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে র‌্যাকারচালক মোস্তফা বলেন, আমি ওই রিকশাচালককে মারিনি। আমি আজ র‌্যাকারের দায়িত্বে থাকলেও আমি ডিউটিতে এসেই দেখি এসব ঘটনা। পরে আমি ওই রিক্সাচালককে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছি। আমি বলেছি আগে চিকিৎসা করো পরে যা হওয়ার হবে। বর্তমানে আহত ফজলু সাভারের সুপার ক্লিনিকে ভর্তি আছে।

এব্যাপারে জানতে ঢাকা জেলা উত্তর ট্রাফিক পুলিশের অ্যাডমিন হোসেন শহীদ চৌধুরী বলেন আমি ব্যাস্ত আছি, পরে কথা বলবো। এরপর একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!