গ্যাস সিলিন্ডারের লিকেজ থেকে বিস্ফোরনে আশুলিয়ায় দগ্ধ ১০

সাভার প্রতিনিধিঃ সাভারের আশুলিয়ায় গ্যাস সিলিন্ডার লিকেজ থেকে বিস্ফোরনের ঘটনা ঘটেছে। এসময় লাগা আগুনে দগ্ধ হয়েছেন নারীসহ অন্তত ১০ জন। এর মধ্যে ৬ জনকে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। রবিবার সকালে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন ডিইপিজেড ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার প্রণব চৌধুরী। এর আগে শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে আশুলিয়ার শ্রীপুর নয়ানগর এলাকার আনোয়ার হোসেনের বাড়িতে এই বিস্ফোরন ও অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে।

বিস্ফোরনের ঘটনায় অগ্নিদগ্ধরা হলেন, ওই বাড়ির ভাড়াটিয়া নজরুল ইসলাম, রাজিয়া বেগম, কমলা বেগম, হাশেম মিয়া, মহসিন, সাদেকুল, পল্লব রায়, সাবিনা, হাসি বেগম ও মুসলিমা বেগম। তারা সবাই স্থানীয় তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিক বলে জানা গেছে। এর মধ্যে পল্লব রায়, হাসি বেগম, রাজিয়া ও মুসলিমা বেগমকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। বাকি ছয়জন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি রয়েছেন বলে জানিয়েছেন আশুলিয়া থানার এসআই নুরুল ইসলাম।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, শনিবার রাতে শ্রীপুর নয়ানগর এলাকার আনোয়ার হোসেনের বাড়িতে বাড়িতে হঠা অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। এসময় ওই বাড়ির কয়েকজন ভাড়াটিয়াকে শরীরে আগুন নিয়ে দৌড়ে বের হতে দেখা যায়। পরে তাদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।

অগ্নিদগ্ধ সাবিনার স্বামী মোতালেব হোসেন জানান, রাতে কাপড়ের দোকান থেকে বাসায় ফেরার সময় হঠাৎ বিকট শব্দ শুনতে পাই। বাসায় গিয়ে দেখি কয়েকটি ঘরে আগুন জ্বলছে এবং প্রচন্ড ধোঁয়া বের হচ্ছে। এসময় আশেপাশে ভাড়াটিয়াদের সহযোগিতায় আমার স্ত্রীসহ ৬ জনকে বের করে আনা হয়। পরে তাদেরকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেয়া হলে সেখান থেকে ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারী ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়।

আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নুরুল ইসলাম বলেন, ‘ভাড়াটিয়া আনিসুর রহমানের ঘর থেকে অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে তথ্য পেয়েছি। তাঁর স্ত্রী হাসি বেগম দগ্ধ হয়েছেন। এঘটনায় প্রতিবেশী ভাড়াটিয়ারাও অগ্নিদগ্ধের শিকার হন। এছাড়া আগুন নেভাতে গিয়েও কয়েকজন সামান্য দগ্ধ হয়েছেন।

ডিইপিজেড ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার প্রণব চৌধুরী বলেন, শনিবার রাতে পোশাক শ্রমিক হাসি বেগম রান্নার জন্য চুলা জ্বালাতে গেলে হঠাৎ বিস্ফোরণ ঘটে। পরে আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এসময় একাধিক পরিবারের অনেকেই দগ্ধ হন। পরে তাদেরকে উদ্ধার করে শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়। তিনি আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডারের ক্যাপের লিকেজ থেকেই গ্যাস ছড়িয়ে পড়েছিল। রান্নার সময় আগুনের স্পর্শ পেতেই তা নিমিষেই ছড়িয়ে পড়ে বলে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. মোঃ তরিকুল ইসলাম বলেন, মধ্যরাতে আশুলিয়া থেকে দগ্ধ অবস্থায় নারীসহ ৬ জনকে আমাদের এখানে আনা হয়। এদের মধ্যে কমলা বেগমের শরীরের ২০ শতাংশ, সাবিনা বেগমের শরীরের ৫০ শতাংশ, সাদিকুল ইসলামের শরীরের ৫০ শতাংশ, হাসেম আলীর শরীরের ৪৫ শতাংশ, নজরুল ইসলামের শরীরের ৪৫ শতাংশ ও মহসিনের শরীরের ১০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। সবাই জরুরী বিভাগের অবজারভেশনে চিকিৎসাধীন আছেন বলেও জানান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!