সাভারে বিষ কারখানার ট্যাঙ্কির পানিতে ১০ লাখ টাকার মাছ নিধন

সাভার প্রতিনিধিঃ সাভারে একটি বিষ কারখানার সেফটি ট্যাঙ্কির পানি পুকুরে ফেলায় বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ১০ লক্ষ টাকার মাছ নিধনের অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশী সানোয়ার হোসেনে বিরুদ্ধে। পড়াশুনার পাশাপাশি দুই বছর ধরে ৮৫ শতক পুকুরে চাষ করা মাছগুলো এভাবে মরে ভেষে উঠায় হতবাক এবং বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন মাছ চাষি ফেরদৌস ও মোঃ তানভীর আহমেদ। শনিবার রাতে সাভারের তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নের পুর্বহাটি এলাকায় এ মাছ নিধনের ঘটনা ঘটেছে।

সরেজমিনে তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নের পুর্বহাটি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মাছ চাষি ফেরদৌস ও তারভীর আহমেদ পুকুরের মরা মাছগুলো উঠিয়ে পাশেই একটি গত খুরে মরা মাছগুলো পুতে রাখছেন। এসময় পুকুরটির চারপাশে ঘুরে যেদিকে চোখ পড়েছে সেদিকেই মাছ দেখা গেছে। শুধু মাছই নয় পুকুরে বিষ কারখানার সেফটি ট্যাঙ্কির পানি ফেলায় মড়ে ভেসে উঠেছে সাপ, ব্যাঙসহ অন্যান্য প্রানি।

মাছচাষি তানভীর আহমেদ বলেন, আমরা দুই বছর ধরে পুকুরে মাছ চাষ করি কিন্তু আগে কখনও এমন ঘটনা ঘটেনি। গতকার পুকুরের পাশর্^বতী বিষকারখানার মালিক সানোয়ার হোসেন তার সেফটি ট্যাঙ্কির বিষাক্ত পানি সেঁচে পুকুলে ফেলে। এরপর সকালে এসে দেখি পুকুরের সমস্ত মাছগুলো মরে ভেসে উঠছে। এই মাছগুলোর মূল্য আনুমানিক ১০-১২ লাখ টাকা হবে বলে দাবি করেন তিনি। পড়াশুনার পাশাপাশি ক্ষুদ্রভাবে মাছ চাষ করা এই চাষি বলেন, মাছ মারা যাওয়ার ঘটনায় সানোয়ার হোসেনের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেছি। কিন্তু তিনি এখনও পর্যন্ত এখানে আসেনি। বিষয়টি স্থানীয় মেম্বারকে জানিয়েছি তিনি বলেছেন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করতে।

অপর মাছচাষি ফেরদৌস বলেন, পুকুরটিতে আমরা সিলভারকাপ, তেলাপিয়া, রুইসহ বিভিন্ন প্রজাতির ৮০ মন মাছ ছেড়েছিলাম গত পাঁচ মাষ আগে। বর্তমানে এই মাছের মূল্য প্রায় ১০ লাখ টাকার উপরে হবে। পাশর্^বর্তী সানোয়ার এবং আনোয়ার নামে দুই ব্যক্তি লোক দিয়ে তাদের বিষ কারখানার সেফটি ট্যাঙ্কের বিষাক্ত পানি পুকুরে ফেলায় মাছগুলো মরে ভেসে উঠছে। সকাল থেকে বস্তায় বস্তায় মাছ মাটি চাপা দিয়ে যাচ্ছি। আরও অনেক মাছ এলাকার শতাধিক লোকজন যে যেভাবে পারছে নিয়ে গেছে। মাছগুলো মরে যাওয়ায় আমরা আর্থিকভাবে এবং মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠ বিচার এবং ক্ষতিপূরন দাবি করছি।

এদিকে মাছ মরার খবর পেয়ে আশপাশের শত শত লোক ঘটনাটি দেখতে আসে। এসময় সকলেই দুঃখ প্রকাশ করে ঘটনার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তি প্রদানের পাশাপাশি ভুক্তভোগী চাষীদের ক্ষতিপূরন প্রদানের দাবি জানান।

মাছ নিধনের বিষয়ে অভিযুক্ত সানোয়ার হোসেন বলেন, আমার বাড়ির সেফটি ট্যাঙ্কির পানি ফেলছি আরও দুই দিন আগে। পুকুরটি এমনিতেও ময়লা-আবর্জনায় ভরা। দুই দিন আগের ঘটনা আজকে কেন মাছ মরবে? অন্য কোন কারনেও মাছ মরতে পারে। তাই বিষয়টি তদন্তের প্রয়োজন।

জানতে চাইলে সাভার উপজেলা সিনিয়র মৎস কর্মকর্তা মোঃ কামরুল ইসলাম বলেন, আমি বর্তমানে নির্বাচনী ডিউটিতে আছি। তারপরও ভুক্তভোগীরা যদি পুকুরের এক বোতল পানি ও একটা মরা মাছ নিয়ে আমাদের অফিসে আসেন তাহলে সেটি পরিক্ষার জন্য পাঠানো হবে। পরিক্ষায় প্রাপ্ত ফলাফরে ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, এঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!