১০ লাখ টাকা চাঁদা না পেয়ে জমি দখল চেষ্টার অভিযোগ

আশুলিয়া (ঢাকা) প্রতিনিধি: ঢাকার আশুলিয়ায় ১০ লাখ টাকা চাঁদা না পেয়ে রাতারাতি জমি দখল চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় একটি ভূমিদস্যু চক্রের বিরুদ্ধে। গত বৃহস্পতিবার ওই জমিতে থাকা সাইনবোর্ড ভাংচুর করে ফেলে দেয় চক্রটি। এ ঘটনায় চাঁদাবাজদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ভুক্তভোগী মো. নুরু মিয়া আশুলিয়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেন আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফরিদ আহমেদ শেখ।

অভিযুক্তরা হলেন- ঢাকার আশুলিয়া থানাধীন বড়ওয়ালিয়া এলাকার মৃত মোখলেছুর রহমানের ছেলে মো. শাকিল আহম্মেদ (৩৫), শওকত আলীর ছেলে মোহাম্মদ আলী (৫০) ও আহাম্মদ আলী (৩২), ইউসুফ আলীর ছেলে মো. আমির হোসেন (৫০), মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে মো. এখলাস উদ্দিন (৬০), মো. ইয়াব আলীর ছেলে মো. সবুজ (৩২), মৃত গুরজু মিয়ার ছেলে মো. সফিকুল ইসলাম (২৮), মৃত রহিজ উদ্দিনের ছেলে মো. নেদু মিয়া (৫২), মৃত কাজিম উদ্দিনের ছেলে মো. হানিফ (৫৫) সহ অজ্ঞাতনামা ৭/৮ জন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে একই কায়দায় চাঁদা না পেয়ে জমি দখলের অভিযোগে আশুলিয়া থানায় মামলা রয়েছে। এলাকায় বার বার তারা একই কাজ করে যাচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

ভুক্তভোগী মো. নুরু মিয়া জানান, ২০২১ সালের অক্টোবরে আশুলিয়া থানাধীন বড়ওয়ালিয়া মৌজার আর.এস ১৭৭৪ নং দাগের ১০৬ শতাংশ হতে ১৭.৫০ শতাংশ জমি তিনি ক্রয় করেন। এরপর জমির দখল বুঝে নিয়ে সেখানে কাঁটাতারের সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ করে শান্তিপূর্ণ ভোগদখলে নিয়ত আছেন।

তিনি আরও জানান, গত ১৪ ডিসেম্বর সকাল অনুমান ৯টার দিকে উক্ত জমিটি প্লট আকারে ভাগ করার জন্য বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ করতে গেলে ভূমিদস্যু চক্রের সদস্যরা জোরপূর্বক জমিতে প্রবেশ করে তার নিকট ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দিলে কোন প্রকার নির্মান কাজ করতে দিবে না মর্মে প্রাণ নাশের হুমকি প্রদান করে। এসময় ভুক্তভোগী চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ভূমিদস্যু চক্রের সদস্যরা জমিতে থাকা সাইনবোর্ড ভাংচুর করে এবং চাঁদা না দিয়ে নির্মান কাজ করলে ভুক্তভোগীর হাত-পা ভেঙে ফেলবে মর্মে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে। একপর্যায়ে চক্রের সদস্য সফিকুল ইসলাম ও মোহাম্মদ আলী তাদের হাতে থাকা লোহার রড ও ছ্যান নিয়ে ভুক্তভোগীকে মারার জন্য তেড়ে আসে। এসময় ভুক্তভোগী প্রাণভয়ে দৌড়ে গিয়ে আত্মরক্ষা করেন। বর্তমানে ভুক্তভোগী ও তার পরিবারের সদস্যরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলেও জানান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার একাধিক ব্যক্তি জানান, অভিযুক্তরা এ এলাকায় নিয়মিত নির্মাণাধীন ভবনে চাঁদাবাজি, জোরপূর্বক জমি দখল করে চাঁদা আদায়সহ মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তাদের বিরুদ্ধে জমি দখলসহ বিভিন্ন অভিযোগে একাধিক মামলা ও জিডি রয়েছে।

এ ব্যাপারে জানতে প্রধান অভিযুক্ত শাকিল আহম্মেদের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। এছাড়া অন্য অভিযুক্তদের মুঠোফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।

এ ব্যাপারে অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা ও আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফরিদ আহমেদ শেখ জানান, এ বিষয়ে থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী। ইতিমধ্যে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!