সাভারে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে প্রাচীর ভাংচুর-মারধরের অভিযোগ

সাভার প্রতিনিধিঃ সাভারের আমিনবাজার এলাকায় আদালতের রায় অমান্য করে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে অবসরপ্রাপ্ত সরকারী ব্যাংক কর্মকর্তার চলাচলের রাস্তা খুলে না দিয়ে উল্টো তার বাড়ির প্রাচীর ভাংচুরের অভিযোগ উঠেছে। এসময় বাড়ীর লোকজন প্রাচীর ভাংচুরের বাঁধা প্রদান করলে বাড়ির চার সদস্যকে মারধর করা হয়েছে। এঘটনায় ভুক্তভোগী ওই ব্যাংক কর্মকর্তার স্ত্রী বাদি হয়ে সাভার মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
সন্ত্রাসী হামলায় আহতরা হলেন, সাভারের আমিনবাজার দেওয়ানবাড়ি মহল্লার মৃত তোফায়েল উদ্দিনের ছেলে অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা বশির আহমেদ, তার স্ত্রী জোহরা খাতুন, ছেলে মোঃ জহুর আহমেদ এবং ভাতিজি একরামুন্নেছা।
লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, সাভারের আমিনবাজার ইউনিয়নের বেগুনবাড়ি মৌজার আর.এস খতিয়ান ১১৩ এবং আর.এস দাগ ১৫৫, জমির পরিমান ৩৩ শতাংশ পৈত্রিক সুত্রে মালিক হয়ে সীমানা নির্মান করে দীর্ঘদিন ধরে ভোগদখল করে আসছেন ব্যাংক কর্মকর্তা বশির আহমেদ। বেশকিছুদিন ধরে প্রতিবেশী সারোয়ার হোসেন টুটুল(৪২), মোঃ রাজিব (৩২), মোঃ এরশাদ(৪০) জোরপূর্বক সীমানা প্রাচীর ভাংচুরের চেষ্টা চালাচ্ছে। গত ১৭ মে দুপুরে তারা বহিরাগত সন্ত্রাসী এনে বশির আহমেদের বাড়ির সীমানা প্রাচীর ভাংচুর করেন। এসময় বাঁধা দেয়ায় বশির আহমেদ, তার স্ত্রী, ছেলে ও ভাতিজি সন্ত্রাসীদের হাত থেকে বশির আহমেদকে বাঁচাতে এগিয়ে তাদেরকে মারধর করা হয়।
সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, ১৫ আগে আমিনবাজার ইউনিয়ন পরিষদ গ্রাম আদালতে দায়ের করা অভিযোগের বাদী ও বিবাদী পক্ষের ৩ জন করে প্রতিনিধি এবং ইউপি চেয়ারম্যানের ৪ জনসহ মোট ১০ জনের একটি জুরি বোর্ড গঠন করে বিবাদীর বিভিন্ন অনৈতিক এবং বিবেক বর্জিত কার্যকলাপের প্রেক্ষিতে একটি রায় প্রদান করেন। যার বিরুদ্ধে বিবাদী পরবর্তীতে আপীল করলে সরেজমিনে তদন্ত করে সাক্ষী প্রমানের ভিত্তিতে বিবাদীর আবেদন অযৌক্তি ঘোষনা করে পুর্বের রায় বহাল রাখিয়া উভয় পক্ষকে রায়ের বাস্তবায়ন করে মিলেমিশে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়।
ভুক্তভোগী বশির আহমেদ বলেন, আমিনবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রকিব আহমেদ এর নের্তৃত্বে শতাধিক লোকজন দা-কোদালসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমার বাড়িতে প্রবেশ করে ১৫ বছর আগে গ্রাম আদালতের রায়ে নির্মিত সীমানা প্রাচীর ভাংচুর করে। এসময় আমিসহ পরিবারের লোকজন বাঁধা দিলে সন্ত্রাসীরা সবাইকে মারধর করে আটকে রাখে। একজন ইউপি চেয়ারম্যান কিভাবে গ্রাম আদালতের রায় অমান্য করে আমার চলাচলের রাস্তা খুলে না দিয়ে উল্টো বাড়ির সীমানা প্রাচীর ভাংচুর করলো? আমি এর সুষ্ঠ বিচার চাই।
অন্যদিকে ৪ মিনিট ১২ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে দেখা যায় আমিন বাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রকিব আহম্মেদের নের্তৃত্বে ৪০-৫০ জন লোক বশির আহমেদের বাড়ির প্রাচীর ভাংচুরের চেষ্টা চালায়। এসময় বশিশ আহমেদ বাঁধা দিলে তাকে হুমকি ধামকি দিয়ে শাসানো হচ্ছে। একপর্যায়ে কয়েকজন মিলে বশির আহমেদকে ধরে নিয়ে গেলে তার স্ত্রী ও ছেলে সেখানে বাঁধা প্রদান করে। এসময় সন্ত্রাসীদেরকে কোদাল দিয়ে স্ত্রী-ছেলেকে কোপ দেয়াসহ মারধর টানাহেচরা করতে দেখা যায়।
অভিযুক্ত আমিনবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রকিব আহম্মেদ বলেন, আগে আদালত যে রায় দিয়েছিলো সেটা কিসের ভিত্তিতে দিয়েছে আমি তা জানিনা। এটা আমার কাছে সঠিক মনে হচ্ছেনা। বর্তমানে দুই পক্ষের মধ্যে চলাচলের রাস্তা নিয়ে সমস্যার বিষয়ে আমার কাছে আসলে আমি এলাকাবাসীদের সাথে কথা বলে তাদের মতামতের ভিত্তিতে প্রাচীরটি ভেঙ্গে দিয়েছি।
সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাহুল চন্দ বলেন, গ্রাম আদালতের নির্দেশ অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে যে কোন আদালতে আপীল করা যাবে। এছাড়া যদি আমাদের কাছেও লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!