মাদক ব্যবসায়ীর বাড়ি দেখিয়ে দেয়ায় নারীকে হত্যা করে মাটিচাপা

সাভার প্রতিনিধিঃ সাভারের বিরুলিয়া এলাকায় আইন-শৃঙ্খলাবা বাহিনীর সদস্যদেরকে চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীর বাড়ি দেখিয়ে দিয়েছিলো পুলিশের সোর্স সীমা বেগম (৪২)। পরে ওই বাড়ি থেকে ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি হামিদ মন্ডল এবং মাদক ব্যবসায়ী স্বপনের স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সদস্যরা। এঘটনার জেরে ক্ষিপ্ত হয়ে অন্যান্য মাদক ব্যবসায়ীরা গত ২ জুন গোয়েন্দা পুলিশের সোর্স সীমা বেগমকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায়। বৃহস্পতিবার বিকেলে বিরুলিয়া ইউনিয়নের খনিজনগর এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী স্বপনের বাড়ির পাশ থেকে মাটি চাপা দেয়া অবস্থায় নিখোঁজ সীমা বেগমের গলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

নিহত সীমা বেগম (৪২) মাদারীপুর জেলার শিবচর থানার মুন্সীকাদিরপুর গ্রমের বাসিন্দা। তার স্বামীর নাম জাহাঙ্গীর খান। তিনি ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা হামিদ মন্ডলকে মাদকসহ গ্রেপ্তারে ডিবি পুলিশকে সহযোগিতা করেছিলেন।

গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) জানায়, মাদক ব্যবসায়ীর বাড়ি দেখিয়ে দেয়ার পর সীমা বেগম নিখোঁজের ঘটনায় পুলিশের পাশাপাশি ছায়া তদন্ত করছিলা। এরই মধ্যে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সন্দেহভাজন হিসেবে মাদক ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি সাভারের ইমান্দিপুর মহল্লার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। সাইফুলের দেওয়া তথ্যমতে, ঘটনাস্থল থেকে বৃহস্পতিবার মাদক ব্যবসায়ী স্বপনের বাড়ির পাশ থেকে নিখোঁজ সীমা বেগমের গলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

নিহতের সীমার বেগমের মেয়ে তানিয়া আক্তার বলেন, গত ১৩ মে ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দল স্বপনের বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় মাদকসহ স্বপনের স্ত্রী ও যুবলীগ নেতা হামিদ মন্ডলকে গ্রেপ্তার করলেও স্বপন পালিয়ে যায়। ঘটনার কয়েকদিন মা আমাকে ফোন করে জানায়, স্বপন লোকজন ঠিক করেছে তাকে মারার জন্য। এর দুইদিন পর থেকেই আমার মা নিখোঁজ হয় এবং আজ স্বপনের বাড়ির পাশ থেকে মায়ের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

তানিয়া আক্তারের অভিযোগ, ডিবির অভিযানের সময় আমার মায়ের কাছে স্বপনের বাড়ি কোথায় জানতে চেয়েছিল, আমার মা নাকি পুলিশকে স্বপনের বাড়ি দেখিয়ে দিয়েছিল। এঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে মাদক ব্যবসায়ী স্বপন, রেজাউল ও সাইফুলসহ আরও কয়েকজন মিলে আমার মাকে তুলে নিয়ে হত্যা করে স্বপনের বাড়ির পাশে মাটিচাপা দেয়।

ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বিপ্লব বলেন, নিহত সীমা বেগম র‌্যাব, পুলিশ ও বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সোর্স হিসেবে কাজ করতেন। আমরাও মাদক উদ্ধারে তার সহযোগিতা নিয়েছি। সীমা বেগমের নিখোঁজের খবর পেয়ে আমরা ছায়া তদন্ত শুরু করি এবং মাদক ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদে সে সরাসরি এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত বলে জানায়। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার স্বপনের বাড়ির পাশ থেকে নিখোঁজ সীমা বেগমের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত বাকীদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!