খাদ্যগুদামে ‘চাবি’ কেলেঙ্কারি, পরিদর্শনে তদন্ত কমিটি

ময়মনসিংহ প্রতিনিধিঃ ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলা খাদ্যগুদামে চাবি কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে উপজেলাসহ জেলা খাদ্য বিভাগের ভেতরে-বাইরে। সোমবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে এ ঘটনার রহস্য উদঘাটনে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

তবে সংশ্লিষ্ট ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ শাকিল আহম্মেদ গুদামের চাবি নিয়ে অনুপস্থিত থাকায় তদন্ত কাজ অসম্পূর্ণ রেখেই ফিরে যান তদন্ত কমিটির সদস্যরা। সন্ধ্যায় এতথ্য নিশ্চিত করেছেন তদন্ত কমিটির প্রধান ও গৌরীপুর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ঘটনার তদন্ত চলমান আছে। তবে গুদামে কোনো মজুদ ঘাটতি আছে কি-না তা খতিয়ে দেখতে একজন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে গুদাম খোলা হবে। বিস্তারিত পরে জানা যাবে।

সূত্র জানায়, উপজেলা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাকিল আহমেদের বদলির আদেশ হয় গত ১০ অক্টোবর। তার স্থলে জামালপুর থেকে বদলি হয়ে আসেন মোঃ সাইফুল ইসলাম রতন। ওই আদেশে গত ১১ অক্টোবর তিনি উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে যোগদান করেন।

কিন্তু বদলি হওয়া কর্মকর্তা শাকিল আহম্মেদ গুদামের চাবি নতুন কর্মকর্তাকে বুঝিয়ে না দিয়ে মোবাইল ফোন বন্ধ রেখে টাঙ্গাইলের গ্রামের বাড়িতে চলে যান। ফলে চাবি না থাকায় গুদামের সব কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। আর এ কারণেই নতুন কর্মকর্তা দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারছেন না।

এ অবস্থায় জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ঘটনার রহস্য উদঘাটনে অর্থাৎ কেন বা কি কারণে গুদামের আগের কর্মকর্তা চাবি বুঝিয়ে দিচ্ছেন না, তা অনুসন্ধানে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।

এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, চলতি বোর মৌসুমে সিদ্ধ চাল বরাদ্দ নিয়ে প্রভাবশালী এক আওয়ামী লীগ নেতা ও মিল মালিক উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক এবং গুদাম কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে বরাদ্দের চাল গুদামে না দিয়েই বিল ভাউচার করে টাকা উঠিয়ে নিয়ে গেছেন। এতে করে গুদামে মজুদ ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
তবে বিষয়টি অস্বীকার করেছেন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রেবেকা সুলতানা রুবী বলেন, এ ধরনের কোনো তথ্য আমার জানা নেই। বরাদ্দের চাল গুদামে দেওয়ার পরই বিল ভাউচার দেওয়া হয়েছে।

জানতে চাইলে দায়িত্ব না পাওয়া নতুন কর্মকর্তা মোঃ সাইফুল ইসলাম রতন বলেন, আগের কর্মকর্তা গুদামের চাবি এখনো আমাকে হস্তান্তর করেনি। তবে গত ১১ অক্টোবর আমি এই কার্যালয়ে যোগদান করেছি। এসব বিষয়ে জানতে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ আবদুল কাদের এবং উপজেলা খাদ্য গুদামের বদলি হওয়া কর্মকর্তা মোঃ শাকিল আহম্মেদের বক্তব্য জানা যায়নি।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) একেএম লুৎফর রহমান বলেন, ঘটনাটি মৌখিকভাবে আমাকে জানানো হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে- গুদামে মজুদ ঘাটতি থাকতে পারে। তবে তদন্ত শেষে সঠিক বিষয়টি জানা যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!