সাভার প্রতিনিধিঃ ফোন করে এক বাড়িওয়ালাকে ডেকে নিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) আবাসিক হলে আটকে রেখে তার স্ত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে সাভার মডেল থানা পুলিশ। এঘটনায় তাদের ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। রবিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলণের মাধ্যমে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অবস) আব্দুল্লাহিল কাফি।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- জাবির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৫ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজ, মীর মোশাররফ হোসেন হল ছাত্রলীগের সভাপতি প্রার্থী আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মোস্তফা মনোয়ার ওরফে সাগর সিদ্দিকী, ৪৫ তম ব্যাচের হাসানুজ্জামান এবং উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের ৪৭ তম ব্যাচের সাব্বির হোসেন। তারা সবাই শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান সোহেলের অনুসারী কর্মী হিসেবে পরিচিত।
সংবাদ সম্মেলনে আব্দুল্লাহিল কাফি বলেন, ধর্ষনের ঘটনার মূল হোতা মোস্তাফিজকে সাভার বাজার বাসষ্ট্যান্ড এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়। এছাড়া ধর্ষনকারীদের পালিয়ে যেতে সহযোগীতাকারী আরও তিন জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এঘটনায় ছয়জন আসামি রয়েছেন। বাকি দুইজনকেও দ্রুত সময়ে গ্রেপ্তার করা হবে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা। তারা হলেন ভুক্তভোগীদের ভাড়াটিয়া বহিরাগত মামুন (৪৫) ও জাবির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী মুরাদ।
এদিকে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে জাবির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। সকাল সাড়ে ১১ টা থেকে এ কর্মসূচি শুরু হয়। পরে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন। সমাবেশে বক্তারা ধর্ষণের ঘটনায় জড়িততের সর্বোচ্চ শাস্তির পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ব্যর্থতার জন্য উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করেন।
অন্যদিকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিকে স্থায়ী বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
প্রসঙ্গত: মামুন নামে এক যুবক শনিবার সন্ধ্যায় তার বাড়িওয়ালা রবিনকে ডেকে নিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মোশাররফ হোসেন হলের ‘এ’ ব্লকের ৩১৭ নম্বর কক্ষে আটকে রাখেন। এরপর তার স্ত্রীকে ফোন করে নিজের রেখে আসা জিনিসপত্র আনতে বলেন মামুন। ওই নারী জিনিসপত্র নিয়ে ক্যাম্পাসে আসলে মামুন হলের ভেতরে সেগুলো রেখে আসেন। পরে ওই গৃহবধুকে স্বামীর কাছে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে হলের পাশর্^বর্তী জঙ্গলে নিয়ে ছাত্রলীগ নেতা মোস্তাফিসহ দলবদ্ধভাবে ধর্ষন করে। এঘটনায় ভুক্তভোগী নারী সাভার মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ চার জনকে গ্রেপ্তার করে।