সাভারে নির্বাচনী সহিংসতার জেরে ব্যবসায়ীকে গলা কেটে হত্যা

সাভার প্রতিনিধিঃ সাভারের আশুলিয়ায় ডেইরী ফার্ম ব্যবসায়ী ও পল্লী বিদ্যুৎ এর ঠিকাদার কাজিম উদ্দিনকে নিজ ঘরে গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৯ আসনের সতন্ত্র প্রার্থী তালুকদার মোঃ তৌহিদ জং মুরাদের ঈগল প্রতিকের নির্বাচন করায় প্রতিপক্ষের লোকেরা তাকে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ পরিবারের। বুধবার দুপুরে আশুলিয়ার ডেন্ডাবর এলাকার লিপি ডেইরি ফার্মের ভিতর থেকে ফার্মের মালিক কাজিম উদ্দিন মাদবরের (৫৩) গলাকাটা মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এর আগে সকালে হত্যাকান্ডের খবর পেয়ে আশুলিয়া থানা পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

নিহত কাজিম উদ্দিন মাদবর ঢাকার আশুলিয়ার ডেন্ডাবর উত্তরপাড়া এলাকার মৃত ওয়াজ উদ্দিন মাদবরের ছেলে। তিনি পেশায় ব্যবসায়ী ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ঠিকাদার ছিলেন।

পুলিশ ও নিহতের পরিবার জানায়, প্রায় রাতে বাড়ির পেছনে খামারের একটি ঘরে থাকতেন কাজিম উদ্দিন। ওই ঘরের তালার একটি চাবি নিহতের কাছে, আরেকটি তাঁর স্ত্রীর কাছে ছিল। সকালে নিহতের স্ত্রী এসে ঘরের বাহিরে তালা দেখতে পান। এসময় নিজের কাছে থাকা চাবি দিয়ে দরজার তালা খুলে ভেতরে ঢুকে বিছানার ওপরে স্বামীর মরদেহ দেখতে পান। এসময় নিহতের গলায় ধারালো অস্ত্রের জখম ছিল। পুলিশকে অবহিত করলে তারা এসে মরদেহ উদ্ধার করে।

নিহতের বড় ভাই গুল বাহাদুর খাঁন বলেন, দ্বাদস জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমরা পরিবারের সবাই স্বতন্ত্র প্রাথী মুরাদ জং এর ঈগল প্রতিকের পক্ষে কাজ করেছি। আমাদের প্রার্থী হেরে যাওয়ায় নির্বাচনের পর থেকেই স্থানীয় দেলোয়ার কট্রাক্টরের ছেলে আনোয়ার, তার ভাই ইমন, মোমিনসহ ১৫-২০ একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ আমাকে এবং আমার ভাই-ভাতিজাদের মারধরসহ প্রতিনিয়ত হত্যার হুমতি দিতো। গত মাসেও তারা আমার ছোট ভাই নাজিমুদ্দিন ও ভাতিজা পারভেজকে মারধর করেছে।

তিনি আরও বলেন, সন্ত্রাসীরা প্রতিনিয়ত হুমকি দিয়ে বলতো এখন আমাদের সময় এসেছে। এতোদিন তোদেরকে অনেক ছাড় দিয়েছি। এলাকায় থেকে তোরা অন্য প্রতিকের নির্বাচন করস, এখন আমাদের ক্ষমতা এসেছে তোদেরকে শেষ করে দিবো। আজকে আমার ভাইকে নিজ ঘরে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। আমি এর সুষ্ঠ বিচার চাই।

নিহতের ছোট ছেলে লিয়াকত হোসেন লিঙ্কন বলেন, আমার আব্বু সংসদ নির্বাচনে ঈগল প্রতিকে নির্বাচন করা স্বতন্ত্র প্রার্থী আমার মামা হওয়ায় পরিবারের সকলেই তার নির্বাচন করেছি। কিন্তু ঈগল হেরে যাওয়ার কারনে এলাকার উশৃঙ্খল ও সন্ত্রাসী আনোয়ার বাহিনীর সদস্যরা আমার বাবা ও চাচাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতো। তারা প্রতিনিয়ত আমাদের ধরে নিয়ে হত্যার হুমকি দিতো এবং আমার চাচাকে কয়েকদিন আগের হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করে। আমরা বিষয়গুলো র‌্যাবের সাথে শেয়ার করেছি। তারা সিসি টিভির ফুটেজও নিয়ে গেছে। আমরা এ ঘটনা সুষ্ঠ তদন্ত এবং হত্যাকারীদের ফাঁসি দাবি করছি।

আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম সায়েদ বলেন, নিহতের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিক সুরতহালে দেখা গেছে নিহতের গলায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তদন্ত করে দ্রুতই হত্যাকাণ্ডের রহস্য খুঁজে বের করে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে। হত্যাকান্ডে রহস্য উন্মোচনে কাজ চলছে। একই সাথে ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্টকে (সিআইডি) খবর দেয়া হয়েছে। তারাও বিষয়টি দতন্ত করছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!