সাভার প্রতিনিধিঃ সাভার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ধামসোনা ইউনিয়ের দুটি ভোট কেন্দ্রে সারাদিনে মাত্র ২৯ ভোট কাস্ট হয়েছে। সকাল ৮ টা থেকে শুরু হয়ে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত ভোটগ্রহন চললেও সারাদিনে অন্যান্য কেন্দ্রের তুলনায় কেন্দ্র দুটিতে ভোটারের উপস্থিত কম ছিলো। যে কারনে সেখানে দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের ঘুরে ফিরে অলস সময় পার করতে দেখা গেছে।
সর্বনিন্ম ভোট কাস্ট হওয়া কেন্দ্র দুটি হলো আশুলিয়ার পল্লীবিদ্যুৎ এলাকার ডেন্ডাবর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র নং-১ (পুরুষ) ও ডেন্ডাবর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র নং-২ (মহিলা)। কেন্দ্র দুটিতে মোট ভোটার সংখ্যা ছিল ৪ হাজার ৯৬ জন।
এর মধ্যে ডেন্ডাবর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র নং-১ এ মোট ভোটার সংখ্যা ছিলো ২০৪৫ জন। এর বিপরীতে ভোট পরেছে মাত্র ১৫ টি। আর ডেন্ডাবর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র নং-২ এ মোট ভোটার সংখ্যা ছিলো ২০৫১ জন। এর বিপরীতে ভোট পরেছে মাত্র ১৪ টি।
যেখানে গত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ডেন্ডাবর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র নং-১ মোট ভোট কাস্ট হয়েছে ৭৩৭টি এর মধ্যে বর্তমান সংসদ সদস্য সাইফুল ইসলাম (স্বতন্ত্র প্রার্থী) ট্রাক প্রতিকে একাই পেয়েছেন ৬৮১ ভোট। অন্যদিকে ডেন্ডাবর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র নং-২ এ মোট ভোট কাস্ট হয়ে ৫৬২ টি, যেখানে বর্তমান সংসদ সদস্য সাইফুল ইসলাম (স্বতন্ত্র প্রার্থী) ট্রাক প্রতিকে একাই পেয়েছেন ৪৯৭ ভোট। কিন্তু চার মাসের ব্যবধানে ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ওই দুই কেন্দ্রে মোট ভোট পড়েছে ২৯টি।
ডেন্ডাবর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র নং-২ এ ভোট প্রদানকারীরা জানালেন, এবার নির্বাচনে উপজেলা চেয়ারম্যান পদের প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় নির্বাচিত হয়ে যাওয়ায় প্রচার-প্রচারনা, মাইকিং পোস্টারিং তেমনটা চোখে পড়েনি। এছাড়া সংসদ সদস্যের এলাকায় তার বাড়ির সবচেয়ে কাছের কেন্দ্র দুটিতে এতো কম ভোট পড়েছে যা সত্যিই আশ্চর্যজনক বিষয়। সংসদ সদস্য সাইফুল ইসলাম চেষ্টা করলে ভোটার উপস্থিতি আরও বাড়তে পারতো।
কেন্দ্র দুটিতে ভাইস চেয়ারম্যান পদে চশমা প্রতীকের প্রার্থী ইমতিয়াজ উদ্দিন পেয়েছে ২৩ ভোট, তালা প্রতীকের প্রার্থী সাইদুল ইসলাম পেয়েছেন ৫ ভোট এবং টিউবয়েল প্রতীকের প্রার্থী মোশাররফ খান পেয়েছেন মাত্র ১ ভোট। অন্যদিকে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে কলস প্রতীকের প্রার্থী মোছাঃ মনিকা আক্তার পেয়েছে ২১ ভোট, ফুটবল প্রতীকে ইয়াসমিন আক্তার সুমী পেয়েছে ৪ ভোট এবং প্রজাপতি প্রতীকের নাদিয়া নুর পেয়েছে ৪ ভোট।
ডেন্ডাবর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র নং-২ এর প্রিজাইডিং অফিসার মোঃ মোশাররফ হোসেন বলেন, আমাদের কেন্দ্র সারাদিনই ভোটার শূন্য ছিল। সারাদিনে আমাদের এই দুই কেন্দ্রে ২৯টি ভোট পড়েছে। সাধারণ ভোটার কী কারণে ভোট কেন্দ্রে আসেনি তা আমার জানা নেই।
এর আগে এই দুই কেন্দ্রের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিয়োজিত আনসার সদস্য জাকারিয়া হোসেন ও মিজানুর রহমানকে কেন্দ্রের বাইরে টুল পেতে লুডু খেলতে দেখা যায়। তাদের কথা হলে তারা জানান, ভোটার শূন্য মাঠ তাই অলস বসে থাকতে বিরক্ত লাগছে সেজন্য লুডু খেলে সময় পার করছি। অপর আনসার সদস্য মোঃ মাইদুল জানান, এ পর্যন্ত তিনটি নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করেছি। কিন্ত এমন ফাঁকা ভোটকেন্দ্র কখনও দেখিনি। এবারের নির্বাচন একটি রেকর্ড হয়ে থাকবে।
সাভার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাহুল চন্দ বলেন, সাভার উপজেলায় যিনি চেয়ারম্যান পদে প্রাথী ছিলেন তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় নির্বাচিত হয়ে যাওয়াও ভোটারদের আগ্রহ খুবই কম। আর সেজন্যই ভোটার উপস্থিতি বলতে একেবারে শূন্য।