আশুলিয়া প্রতিনিধিঃ সাভারের আশুলিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় দুই পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে অজ্ঞাতনামা ১০০/১৫০ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। বুধবার দিবাগত রাতে আশুলিয়া থানায় মামলাটি (নং-১৮) দায়ের করেছেন নিহত এএসআই মোঃ সোহেল রানার স্ত্রী মোছাঃ রেশমা পারভীন।
নিহত এএসআই মোঃ সোহেল রানা (বিপি-৮৩০২০৮৪৩৮৯) নওগাঁ জেলার সদর থানার কীর্তিপুর গ্রামের মোঃ হাবিবুর রহমানের ছেলে। গে গত দুই বছর ধরে ঢাকা জেলার ডিএসবি আশুলিয়া জোনে কর্মরত ছিলো।
মামলার এজাহারে মোছাঃ রেশমা পারভীন উল্লেখ করেছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গত ৫ আগষ্ট আমার স্বামী এএসআই মোঃ সোহেল রানা নিজ ভাড়া বাসায় অবস্থানকালে করছিলো। এদিন দুপুর আড়াইটার দিকে একদল দুস্কৃতিকারী আশুলিয়া থানা ঘেরাও করার চেষ্টা করে। এঘটনায় বিকেল ৪ টার দিকে আমার স্বামীর সহযোগী এএসআই মোঃ রাজু আহমেদ, কনস্টেবল নামজুল হক ও কনস্টেবল আতোয়ার হোসেন তাদের নিরপত্তার কথা চিন্তা করে থানা না গিয়ে আমার স্বামীর বাসায় আশ্রয় নেয়। দুস্কৃতিকারীরা থানা ঘেরাও করে তান্ডবলীলা চালানোর একপর্যায়ে থানার পাশর্^বর্তী এলাকায় পুলিশের বাসা খুজতে থাকে। বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে অজ্ঞাতনামা ১০০/১৫০ জন দুস্কৃতিকারী দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র ও লাঠিসোঠা নিয়ে সোহেল মোল্লার ভাড়া বাসার গেট ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে সোহেল রানাসহ সবাইকে মারধর ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করলে সবাই নিস্তেজ হয়ে যাওয়ায় সকলেই মারা গেছে মনে করে সোহেল রানার লাশটি টানতে টানতে নিচে নামিয়ে দুস্কৃতিকারীরা চলে যায়।
এর কিছুক্ষন পর কনস্টেবল নাজমুল হক ও কনস্টেবল আতোয়ার হোসেনের জ্ঞান ফিরলে তারা কৌশলে পালিয়ে যায়। এসময় এএসআই রাজু আহমেদ এর লাশ সোহেল রানার ভাড়া বাসায় পরে থাকে। পরবর্তীতে সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে আবারও দুস্কৃতিকারীরা ঘটনাস্থলে এসে বাসার নিচে থাকা সোহেল মোল্লার লাশটি টেনে হিচড়ে থানার সামনে নিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং এএসআই রাজু আহমেদের লাশটি নিয়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের ফুটওভার ব্রীজের সাথে ঝুলিয়ে রাখে। পরেরদিন ৬ আগষ্ট পরিবারের লোকজন নিহত সোহেল রানার লাশটি নিয়ে গিয়ে দাফন করেন।
আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, হত্যাকান্ডের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান রয়েছে।