পটুয়াখালীতে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে সরকারের একরকৃত জমি ক্রয়-বিক্রয়

পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধিঃ পটুয়াখালী জেলা সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের দালাল সিন্ডিকেট রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। দলিল লেখক, সমিতির সভাপতি ও স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির সমন্বয়ে গঠিত এ সিন্ডিকেটের যোগসাজশে সাব-রেজিস্ট্রার বিজয় কৃষ্ণ বসু জড়িয়ে পড়েছেন নানা অনিয়মে ও দূর্নীতির বেড়াজালে।

অনুসন্ধানে গেলে দেখা মেলে, সিন্ডিকেটের সাথে হাত মিলিয়ে সরকারি নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে জমির শ্রেণি পরিবর্তন, আবাসিক জমি নাল দেখিয়ে, মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সাব রেজিস্ট্রার বিজয় কৃষ্ণ বসু ও সিন্ডিকেট দল। পটুয়াখালী বহাল গাছিয়া মৈাজার– এস,এ খতিয়ান ৬৭ দাগ নং ৭৩ বাটা ১০০৮ জমি ১৯ শতক। দেখাযায় বহাল গাছিয়া নিবাসী মজিবর সরকারি একরকৃত জমিথেকে ৯ শতক জমি মোসারেফ এর নিকট ৬ লক্ষ ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন।

পটুয়াখালীর বহালগাছিয়া মৌজার এল এ কেস নং৪৪/ ৬১-৬২ তে গনপূর্ত বিভাগের অধিগ্রহন কৃত ৪২ একর জমিসহ বিভিন্ন সময়ে নামে বেনামে, সাব-কবলা দলিলের পরিবর্তে হেবাবিল এওয়াজ, অসিয়ত নামা, ঘোষণাপত্র, আম মোক্তার নামা দলিল রেজিষ্ট্রি করে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা।

যার মধ্যে বহালগাছিয়া এলাকার এল এ কেস নং৪৪/১৯ ৬১-৬২ তে গনপূর্ত বিভাগের অধিগ্রহনকৃত ৬৭ খতিয়ানের ১০০৮ দাগের ১৯ শতক জমির ৯ শতক জমি বিক্রির উদ্দেশ্যে সাব রেজিষ্টারের সহায়তায় দলিল সম্পূর্ণ করেন যা যা সম্পুর্নরুপে বেয়াইনি।

এ দালাল সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বাধ্যতামূলক ভাবে প্রতি দলিল থেকে আড়াই হাজার থেকে তিন হাজার টাকা শেরেস্তার নামে, অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে। এ টাকা দলিল লেখক সমিতি, মসজিদ ও বিভিন্ন জাতীয় দিবসের চাঁদার কথা বলা হলেও ভাড়া বাড়িতে অফিস করায় সম্পুর্ন টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগ ভাটোয়ারা করে আত্মসাৎ করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত

এ বিষয়ে পটুয়াখালী সাব-রেজিস্ট্রার বিজয় কৃষ্ণ বসুর কাছে সরকারি একোয়ারকৃত জমি দলিল হওয়ার বিষয় জানতে চাইলে তিনি দৈনিক বরিশাল সমাচারের প্রতিনিধির সাথে সিন্ডিকেট মেম্বারদের (দলিল লেখক) নিয়ে সংবাদকর্মীদের ভয় ভীতি প্রদর্শন করে। এবং তাদের সাথে অসদ্ আচরনে করে, বক্তব্য দিতে অস্বীকার প্রকাশ করে যা পারেন করেন।

সরকারের অধিগ্রহনকৃত জমি দলিলমূলে হস্তান্তরের কোন সুযোগ আছে কিনা এ ব্যপারে জেলা রেজিষ্ট্রার মোঃ কামাল হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ অবস্থায় দলিল করার কোন সুযোগ নেই। তাহলে কিভাবে গত ১২ ঘন্টা আগে এমন একটি দলিল হলো এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি আদালতকে দেখিয়ে দিয়ে এড়িয়ে যান তিনি।

উক্ত ঘটনার ব্যপারে পটুয়াখালী গনপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ হারুন অর রশিদ বলেন, এ বিষয়ে আদালতে মামলা চলমান তাছাড়া ডিসি অফিস আমাদের জমি এখনো বুঝিয়ে দেয়নি । তারপরেও মামলা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান এই কর্মকর্তা।

এ বিষয়ে পটুয়াখালী জজ কোর্টের জি.পি অ্যাড, এম.শাহাবুদ্দিন বলেন, যদি সরকারের অধিগ্রহনকৃত জমি হয় তবে কোনভাবেই তিনি জমি রেজিষ্ট্রেশন করতে পারেন না। যদি সাব- রেজিষ্টার কোনভাবে ঐ জমির রেজিষ্ট্রেশন করেন তাহলে তিনি ব্যাক্তগত লাভবান হওয়ার জন্যই করেছেন বলে জানান তিনি।

তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের এই সিন্ডিকেট দূর্নীতি বন্ধ করা না গেলে সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে তা গ্রাহকের ভোগান্তি বাড়াবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!