চেয়ারম্যানের ছেলের অপরিকল্পিত খাল খননে ভেঙ্গে যাচ্ছে রাস্তা-ঘরবাড়ি

ধামরাই প্রতিনিধিঃ ঢাকার ধামরাইয়ে অপরিকল্পিতভাবে খাল খননের ফলে দুইপাড়ের বসতবাড়ি ও সরকারি রাস্তা ভেঙ্গে বিলিন হওয়ার পথে বসেছে। এতে করে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে খালের পার্শ্ববর্তী কয়েকটি পরিবার। এছাড়া অর্ধকিলোমিটার জুড়ে একটি সরকারি রাস্তার একপাশ ভেঙ্গে পড়ে বিলিন হওয়ার পথে রয়েছে পুরোটি। ঠিকাদারের গাফিলতির কারনে খাল খননে এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

জানা গেছে, গত জানুয়ারি মাসে ঢাকা জেলা প্রশাসনের অনুমতি স্বাপেক্ষে ২৪ লাখ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিয়ে ধামরাই উপজেলার সুয়াপুর থেকে ভাদালিয়া পর্যন্ত খাল খননের কাজ পান সাজ্জাদ হোসেন নামে এক ঠিকাদার। তার সাব ঠিকাদার হিসেবে খাল খনন করে সুয়াপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কফিল উদ্দিনের ছেলে আবদুল হালিম।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, ধামরাইয়ের সুয়াপুর বাজার থেকে গোপীনাথপুর পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার সরকারি কাচা রাস্তা রয়েছে। এ রাস্তার পূর্ব পাশ দিয়েই রয়েছে একটি খাল ও অর্ধশত বসতবাড়ি। গত জানুয়ারি মাসে সুয়াপুর বাজারের দক্ষিণ পাশে খালের ওপর নির্মিত সেতুর মুখে ও গোপীনাথপুর এলাকায় খালের অপর প্রান্তের মুখে বাঁধ দিয়ে ঠিকাদার রাস্তা ও বসতবাড়ি ঘেঁষে অপরিকল্পিতভাবে ভেকু মেশিন দিয়ে খাল খনন করেএবং খালের মাটি বিক্রি করেন। সম্প্রতির টানা বুষ্টিতে ১০০ মিটার কাচা রাস্তা ভেঙ্গে খালে বিলিন হয়ে যায়। এতে ওই রাস্তা দিয়ে রিকশা-ভ্যান চলাচলও বন্ধ হয়ে যায়। একই সঙ্গে আজিজুল হক আইনজা ও মনো মিস্ত্রীসহ কয়েক ব্যক্তির বসত বাড়ি আংশিক ভেঙ্গে হুমকির মুখে পড়েছে। এছাড়া অন্যান্য বসতবাড়িও হুমকির মুখে পড়েছে।

গোপীনাথপুর গ্রামের কফিল উদ্দিন, ছফুর উদ্দিন, আব্দুর রহমান, লোকমান হোসেন বলেন, অপরিকল্পিতভাবে খাল খননের ফলে রাস্তা ও বসতবাড়ি ভেঙ্গে যাচ্ছে। তাদের দাবি, দ্রুত ভাঙ্গন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে অপূরণীয় ক্ষতি হবে।

সুয়াপুর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড সদস্য সফিকুল ইসলাম বলেন, ২০ থেকে ২৫ বছর আগে ধামরাই উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের মাধ্যমে সুয়াপুর বাজার থেকে গোপীনাথপুর পর্যন্ত এক কিলোমিটার রাস্তা নির্মিত হয়। এ রাস্তা দিয়ে ধামরাইয়ের সুয়াপুর, শিয়ালকুল, গোপীনাথপুর, সিংগাইরের ফাড়িরচর, জয়নগর, ইরতা, বার্তা, তালতলা, ইসলামনগরসহ ১৫ থেকে ২০টি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ স্কুল-কলেজসহ হাটবাজারে চলাচল করে আসছেন। কয়েক মাস আগে অপরিকল্পিতভাবে খাল খননের ফলেই বৃষ্টিতে রাস্তা ভেঙ্গে গত এক সপ্তাহ রিকশা-ভ্যান চলাচল বন্ধ ছিল। ফলে শত শত মানুষ দুর্ভোগে পড়েন।

এ বিষয়ে খাল খননের সাব ঠিকাদার আব্দুল হালিম বলেন, উপজেলা প্রশাসন থেকে যেখান দিয়ে চিহ্নিত করে দেওয়া হয়েছিল, সেখান দিয়েই খাল খনন করা হয়েছে। গত কয়েকদিনের প্রবল বৃষ্টিতে রাস্তা ভেঙ্গে পড়েছিল। গত শনিবার কয়েক ট্রাক মাটি ফেলে রিকশা-ভ্যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। এছাড়া যেসব বাড়ি ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে সেই জায়গাও সরকারি জমি দাবি করেন তিনি।

ধামরাই উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা একেএম মনিরুল হক বলেন, রাস্তাটি ভেঙ্গে যাওয়ার বিষয়টি আমাকে কেউ কিছু জানায়নি। তবে খোঁজখবর নিয়ে খুব দ্রুতই ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ধামরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হোসাইন মোহাম্মদ হাই জকী সাংবাদিকদের জানান, এ বিষয়ে সরেজমিন দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!