সাভার প্রতিনিধিঃ সাভারের আশুলিয়ায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয় দিয়ে শহিদুল ইসলাম নামের এক মুদি ব্যবসায়ীকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেছে পরিবারের সদস্যরা। গত চার দিনে সাভার, আশুলিয়া থানাসহ ঢাকা জেলা ডিবি পুলিশ অফিসে খোঁজ নিয়েও কোন সন্ধ্যান না পেয়ে নিখোঁজ ব্যবসায়ীকে ফিরে পাওয়ার জন্য সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা।
নিখোঁজ শহিদুল ইসলাম শরিয়তপুর জেলার ঘোসাইর হাট থানার ইকরাকান্দি গ্রামের শাহ আলম দেওয়ানের ছেলে। তিনি আশুলিয়ার নয়াপাড়া এলাকায় মুসলিম উদ্দিন মার্কেটে মা বাবার দোয়া নামে একটি মুদি দোকানের পাশাপাশি বিকাশ ও সিলিন্ডার গ্যাসের ব্যবসা করতো।
আশুলিয়ার নয়াপাড়ায় ডেকো গার্মেন্টস সংলগ্ন নিখোঁজ ব্যবসায়ীর দোকানের সামনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে নিখোঁজ শহিদুল ইসলামের মামাতো ভাই রিয়াজ উদ্দিন জানান, প্রতিদিনের মতো আশুলিয়ার নয়াপাড়া মোসলেম উদ্দিন মার্কেটে তার মুদি দোকানে বসে বেচা বিক্রি করছিল শহীদুল। গত ৫ ফেব্রুয়ারী রাত আনুমানিক সাড়ে দশটার দিকে পুলিশ লেখা একটি মাইক্রোবাসে করে ৭-৮ জন লোক নিজেদের পুলিশ পরিচয়ে প্রথমে তার দোকানে তল্লাশি চালায় এবং পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের কথা বলে গাড়ীতে করে তুলে নিয়ে চলে যায়। এরপর থেকে তার আর কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। এ ঘটনায় থানায় গিয়েও কোনো সহযোগিতা পাননি বলেও অভিযোগ করেন তিনি। বাধ্য হয়ে শহিদুল ইসলামকে ফিরে পেতে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।
নিখোঁজ শহিদুল ইসলাম এর বাবা শাহ আলম দেওয়ান জানান, আমার ছেলে যদি কোনো অপরাধ করে থাকে তাহলে আইন তার বিচার করবে। কিন্তু আমরা ছেলের কোন খোঁজ খবর পাচ্ছি না। আমি আমার সন্তানকে ফেরত চাই বলেই তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। এসময় তার এক মেয়ে সাদিয়া (১১) তার নিখোঁজ বাবাকে ফেরত পেতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে দাবী জানান। অপর অবুঝ শিশুপুত্র আব্দুর রহমানও বাবার জন্য কান্না করে এবং বাবাকে ফেরত চায়।
আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নিখোঁজ শহিদুল ইসলাম এর স্ত্রী তানিয়া, তিন বছরের শিশু পুত্র আব্দুর রহমান, ছোট ভাই সাইফুল ইসলাম। এসময় স্ত্রী তার স্বামীকে ভাই তার ভাইকে ফেরত চেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
প্রসঙ্গতঃ গত ৫ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত আনুমানিক সাড়ে ১০ টার দিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে একটি সাদা রং এর হাইচ গাড়ীতে আসা সাত আট জন সাদা পোশাকের লোক ব্যবসায়ী শহীদুল ইসলামে নিজ দোকান থেকে তুলে নিয়ে যায়। এঘটনায় তার পরিবার সাভার, আশুলিয়া থানাসহ ঢাকা জেলা ডিবি পুলিশ অফিসে খোঁজ নিলে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বলছে তাকে আটক করা হয়নি। পাঁচ দিনেও তার সন্ধ্যান না পেয়ে পরিবারের সদস্যদের মাঝে চরম আতঙ্ক আর উৎকণ্ঠা বিরাজের পাশাপাশি ওই এলাকায় সাধারণ মানুষের মাঝেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।