১২ মাস বেতন বন্ধ, মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে ৩৯ জন কলেজ শিক্ষক

সাভার প্রতিনিধিঃ সাভার সরকারী কলেজের ৩৯ জন শিক্ষক দীর্ঘ ১২ মাস ধরে বেতন-ভাতা না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। মঙ্গলবার দুপুরে কলেজটির প্রধান ফটকে অবস্থান নিয়ে পাওনা বেতন-ভাতার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী ৩৯ শিক্ষক।

আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে শিক্ষকরা জানান, সাভার কলেজে ১১২ জন শিক্ষক রয়েছেন। এর মধ্যে ২০১৮ সালের ৮ আগস্ট সাভার কলেজ সরকারিকরণ ঘোষণা করা হলে ১৬ আগস্ট ২০২২ সালে ৫৬ জন শিক্ষকের এডহক নিয়োগ চলে আসে। এরপর থেকে বাকী শিক্ষকদের বেতন-ভাতা বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে শিক্ষকরা কলেজ অধ্যক্ষের সাথে দেখা করলে বেতন দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়। তার আশ^াসে আমরা সবাই নিয়মিত কলেজের কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করি। কিন্তু দীর্ঘ ১০ মাস বেতন না পেয়ে শিক্ষকরা আবারও অধ্যক্ষের কাছে গেলে তিনি বলেন বেতন দেওয়া সম্ভব নয়। সব মিলিয়ে ১২ মাস ধরে বেতন না পেয়ে সংবাদ সম্মেলন পাওনা বেতনের দাবি জানান শিক্ষকরা।

সংবাদ সম্মেলনে মার্কেটিং বিভাগের প্রভাষক মোঃ মাসুদ রানা বলেন, আমাদের অধ্যক্ষ চাইলে কলেজ ফান্ড থেকেই এই ৩৯ জন শিক্ষকের বেতনের ব্যবস্থা করতে পারেন। কিন্তু তার অনিচ্ছার কারণে আমরা পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি। টাকার অভাবে আমরা আমাদের সন্তানের লেখাপড়ার খরচও চালাতে পারছি না।

রসায়ন বিভাগের প্রভাষক শিরতাজ বেগম বলেন, আমরা ৩৯ জন শিক্ষক ও তাদের পরিবারের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এ বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য ডা. এনামুর রহমান এবং উপজেলা চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম রাজীবের দারস্থ হয়েও আমরা কোন সহযোগিতা পাচ্ছিনা। আমাদের অধ্যক্ষ স্যার বিষয়টির সমাধান না করায় পরিবার নিয়ে খুবই অসহায় অবস্থায় দিনাতিপাত করছি।

ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রভাষক মোঃ আরিফুর রহমান বলেন, এক বছর ধরে আমরা কোনো ধরনের বেতন ভাতা পাচ্ছি না। এর মাঝে দুটো ঈদ গেলো তখনও কোন ধরনের আর্থিক ভাতা আমাদেরকে দেওয়া হয়নি। আমাদের যতটুকু সঞ্চয় ছিলো সেটি দিয়েই এতদিন পরিবার নিয়ে কোন রকমে চলেছি। এখন আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। আমাদের সামনে আর কোনো পথ খোলা নেই। অবিলম্বে আমাদের বেতন ভাতার ব্যবস্থা না করা হলে আমরা কঠোর আন্দোলনে যাবো।

জানতে চাইলে সাভার সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ ইমরুল হাসান বলেন, কলেজটি সরকারিকরণের আগে শিক্ষার্থীদের থেকে যে টিউশন ফি পাওয়া যেতো সেটা দিয়ে এই শিক্ষকদের বেতন দেওয়া হতো। এখন সরকারি হয়ে যাওয়ার পর শিক্ষার্থীরা যে ২০-৩০ টাকা টিউশন ফি দেয় তা সরকারের ট্রেজারিতে জমা করা হয়। এ বিষয়ে শিক্ষকরা আদালতে একটি মামলাও করেছেন। আমি এ বিষয়ে আর কথা বলতে চাচ্ছি না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!