আশুলিয়ায় ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধি, মশক নিধনে স্প্রে করছেন সুমন ভূঁইয়া

সাভার প্রতিনিধিঃ দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ যখন মারাত্মক আকার ধারণ করেছে তখন সাভারের আশুলিয়ায় জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে জনগনের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছেন ইউপি চেয়ারম্যান শামীম আহমেদ সুমন ভূঁইয়া। তার এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে এর ধারাবাহিকতা ধরে রাখার অনুরোধ করেছেন ডেঙ্গু আতঙ্কে থাকা স্থানীয় বাসিন্দারা।

দেশের অন্যান্য যায়গার সাথে সাথে সাভারেও প্রতিনিয়ত বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। গত মাসে শতাধিক ডেঙ্গু রোগী শনাক্তের পর চলতি মাসে এ সংখ্যা বেড়েছে দ্বিগুণ। এমন পরিস্থিতিতে চিকিৎসকরা উদ্বেগ জানানোয় নিজ উদ্যোগেই এলাকায় মশা নিধনে নানা কার্যক্রম শুরু করেছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।

সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা তুলনামূলক কম হলেও শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ার নারী ও শিশু হাসপাতালে ৪৬ জন ডেঙ্গু রোগী বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এদের মধ্যে বেশির ভাগই ইয়ারপুর ইউনিয়নের জামগড়া, নরসিংহপুর, ঘোষবাগ ও ইউনিকসহ আশপাশের এলাকার বাসিন্দা।

নারী ও শিশু হাসপাতালের ম্যানেজার হারুন অর রশিদ বলেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় পরিক্ষার মাধ্যমে আমাদের হাসপাতালে ৫৩ জন নতুন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। নতুন করে ভর্তি হয়েছেন ১৯ জন। বর্তমানে ডেঙ্গু ওয়ার্ডগুলোতে ৪৬ জন রোগী ভর্তি রয়েছে। এদের মধ্যে নারী ১৭, পুরুষ ১৩ ও শিশু ১৩ জন। এর আগে গত জুন মাসে আমাদের হাসপাতালে ১১৬ জন ডেঙ্গু পজিটিভ পেয়েছি। চলতি মাসে এ সংখ্যা ৩০০ ছাড়িয়েছে। ডেঙ্গু পজিটিভ রোগীরা অধিকাংশই জামগড়া, বাইপাইল, নরসিংহপুরসহ আশপাশের এলাকার বাসিন্দা।

এদিকে প্রতিদিনই ইয়ারপুর ইউনিয়নের জামগড়া, নরসিংহপুর, ঘোষবাগ ও ইউনিকসহ আশপাশের এলাকায় মারাত্মক রূপ নিচ্ছে ডেঙ্গু পরিস্থিতি। তাই এসব এলাকায় ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। এমন অবস্থায় সরকারী বরাদ্দের কথা চিন্তা না করে নিজ উদ্যোগেই জনসচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ডেঙ্গু মশা নিধনে স্প্রে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন ইয়ারপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামীম আহমেদ সুমন ভূঁইয়া।

ইয়ারপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শামীম আহমেদ সুমন ভূঁইয়া বলেন, অপরিকল্পিত নগরায়নের ফলে ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় জমে থাকা পানিতে এডিস মশার লার্ভা জন্মাচ্ছে এবং ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে। এজন্য আমরা ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে মশা নিধনে দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছি। বেশ কিছু ফগার মেশিন ও কেমিক্যাল সংগ্রহ করে কার্যক্রম শুরু করেছি। এ জন্য একটি টিম গঠন করছি, যারা প্রত্যেক দিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকায় জমে থাকা পানি ও আর্বজনাসহ মশা জন্মাতে সেসব স্থানে স্প্রে করবে।

এসব কাজে সরকারি কোন বরাদ্দ আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, বরাদ্দ বড় কথা না। চেয়ারম্যান হিসেবে এই দায়িত্ব তো আমার কাঁধেই বর্তায়। তাই সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে ব্যক্তিগতভাবেই আমি এ কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। ডেঙ্গু নির্মূলে আমরা সব ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছি। পাশাপাশি এ অঞ্চলের বাসিন্দাদেরও সচেতন হওয়ার অনুরোধ করছি। আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করলে ডেঙ্গু নির্মূল করা সম্ভব হবে।

আশুলিয়ার নারী ও শিশু হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালে প্রতিদিনই নতুন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে রোগীরা ভর্তি হচ্ছেন। আমরা চিকিৎসা দেয়ার পাশাপাশি রোগী ও তাদের স্বজনদের সচেতন করার চেষ্টা করছি। বাসাবাড়ির আশপাশে কোথাও যেন পানি জমে না থাকে, এসব বিষয় তাদের বোঝানো হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!